বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার দেবীদ্বারে নিখোঁজের সাত দিন পর কিশোরীর মরদেহ মিলল দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুল্যান্সের ভেতরে। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানা পুলিশ সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাতেই নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাত ৯টায় দেবীদ্বারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দেবীদ্বার পৌর এলাকার ছোট আলমপুর গ্রামের উত্তরপাড়া সোধন ডিলারের বাড়ির ধনু মিয়ার ছেলে মো. সিয়াম (২৩) একই উপজেলার গজারিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার মো. রেজাউল করিমের কন্যা দেবীদ্বার মফিজ উদ্দিন আহমেদ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া জাহান উর্মিকে (১৬) স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাবে প্রায়ই উত্যক্ত করত। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রায় ১১ মাস আগে সিয়াম উর্মীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং বয়স কম থাকায় ইজাব-কবুলের মাধ্যমে বিয়ে হয়।
পরবর্তী সময়ে মেয়ের বাবা জানতে পেরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় ইজাব-কবুলের বিয়ে ছাড়াছাড়ি করে ছেলের বাড়ি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এরই মধ্যে উর্মী দেবীদ্বার মফিজ উদ্দিন আহমেদ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়। গত ২২ অক্টোবর রাতে আবারও সিয়াম তার লোকজন নিয়ে উর্মীকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে আসে। ওই ঘটনায় উর্মীর বাবা মো. রেজাউল করিম মেম্বার দেবীদ্বার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে এক সালিসে মেয়েকে তার বাবার হাতে তুলে দেন।
এ বিয়ে উর্মীর বাবা মেনে না নেওয়ায় এবং উর্মীর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের শারীরিক নির্যাতন তথা দুই পরিবারের টানাপড়েনে গত ২৬ নভেম্বর উর্মী হারপিক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করে আনে।
গত ৫ নভেম্বর উর্মীর মামা ধামতী গ্রামের আব্দুল আউয়াল মারা গেলে উর্মী তার মা-বাবার সঙ্গে ধামতী গ্রামে যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় মামাবাড়ি থেকে উর্মী নিখোঁজ হয়। উর্মীর বাবা রেজাউল করিম মেম্বার সিয়ামকে অভিযুক্ত করে ২৬ নভেম্বর রাতে দেবীদ্বার থানায় একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সিয়ামকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ করার পরদিন ক্ষুব্ধ সিয়াম তার এলাকার প্রায় ৩০-৩৫ জন লোক নিয়ে উর্মীর বাবাকে বাড়ি থেকে তুলে আনে।##